মোরশেদ পাটওয়ারীঃ- লঘু চাপের প্রভাবে চার সমুদ্র বন্দরকে ৩নং সংকেত দেখানো হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) বিকাল পর্যন্ত এই আবহাওয়া থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এ কারণে দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন,
সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের অনেক এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য সমুদ্র বন্দরে ও নদী বন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত রাখা হয়েছে। ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তায় রয়েছে। আগামীকাল বিকাল পর্যন্ত এই আবহাওয়া বজায় থাকতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের (খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর) স্থলভাগে অবস্থান করছে।
লঘুচাপের প্রভাব এখনো বিরাজমান থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলো এবং দেশের উপকূলীয় এলাকায় জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। সেইসাথে ঢাকাসহ চার বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিও অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। আবারও চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোন কোন জায়গায় অতিভারি বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি টেকনাফে ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীতে ১৯০, চট্টগামে ১২৯, মংলা ১২৩, কক্সবাজারে ১১৯, খেপুপাড়ায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল মৌসুমী বায়ূ সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে জারি করা তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও এর কাছাকাছি এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় বায়ূচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা বাড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে । সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী দু’দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবনতা অব্যাহত থাকতে পারে । পরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাত কমতে পারে ।
এছাড়া সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে । আজকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা টেকনাফ ও সন্দ্বীপে ২৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় বায়ুচাপের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।