তুফান মাজহার খান: রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বড়ালু পাড়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ। ২ মেয়ে ১ ছেলেকে নিয়ে বেশ সুখেই চলছিল তার সংসার। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন, ছেলেকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। সেই সাথে দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে একটি মিলে কাজ করে জমানো টাকা দিয়ে ২০ শতাংশ চাষ জমির মালিকও হয়েছেন। কিন্তু এই সুখ তার কপালে বেশিদিন টিকেনি। এরই মধ্যে দেখা দেয় মহাবিপদ। একদিন হঠাৎ করেই কাউকে কিছু না জানিয়েই তার চাষের জমি বালু দিয়ে ভরাট করতে শুরু করে। এসময় ড্রেজারের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করলেও কেউ তার কথা শুনেনি। জমির মূল্যও দেয়া হয়নি। জমি দখলকারীরা নিজেদের ইচ্ছামতো জমি ভরাট করে ফেরে। এখন তিনি জমি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। যে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন তারও কাজকর্ম নেই। তিনি বিদেশে কষ্টে রয়েছে। কায়েতপাড়া ইউনিয়নে জোরপূর্বকভাবে কৃষকের তিন ফসলি জমি বালি ভরাট করার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এসে এভাবেই তার কষ্টের বর্ণনা দিয়েছেন আবু সাঈদ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। আবু সাঈদের মতো অন্যান্য এলাকাবাসীরও একই অবস্থা। তারা তাদের জীবনের জমানো সমস্ত টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু সেই জমি এখন দখল করে নিয়ে যাচ্ছে অন্যরা। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মতোও কারও সাহস নেই। যিনিই প্রতিবাদ করতে যাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে থানায় মামলায় দায়ের সহ নানাভাবে নির্যাতন নিপীড়ন করা হচ্ছে। সেই সাথে জমির নির্ধারিত মূল্যর পরিশোধ করছে না। জোরপূর্বকভাবে জমি দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। ফরিদউদ্দিন খোকন বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর নাম করে আমাদের ১৪ পুরুষের ভিটে মাটি দখল করে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। জানি না আমাদের এখন গন্তব্যস্থল কোথায় হবে। আমরা ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে দিশেহারা। আমাদের কেউই সহযোগিতা করছে না। আমরা অসহায় কৃষকরা তিন ফসলি জমি চাষ করে সংসার চালিয়ে থাকি। প্রধান অতিথি হিসেবে বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের উপস্থিতিতে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মঈন উদ্দিন মানিক, মো: আব্দুল মালেক, মো: সাখাওয়াত হোসেন, মো: আব্দুল কাদের, মো: আব্দুর রশিদ, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, মো: আব্দুল বাতেন ও মো: ফারুম মিয়া সহ এলাকাসীরা।